December 22, 2024, 1:52 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের এক মাঠ কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলো হত্যা মামলার প্রধান আসামি মোমিন দফাদারের স্ত্রী হিরা (৩০) ও পাশের গ্রাম গোলাবাড়িয়ার হাশেম সরদারের ছেলে হেলাল (৩২)। হেলাল মোমিনের আত্মীয়।
গ্রেপ্তারের সময় হিরার কোলে ছিল দেড় বছরের শিশু কন্যা। তবে মামলার প্রধান আসামি মোমিনকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি।
বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) রাতে উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের মলপাড়া গ্রামে মোমিনের বাড়ি থেকে নুরুজ্জামান নান্টুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নুরুজ্জামান দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদে গ্রামীণ ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় ফিল্ড সুপারভাইজার পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি একই উপজেলার খলিসাকুণ্ডি ইউনিয়নের কামালপুর এলাকার মৃত কাজি মোতালেব হোসেনের ছেলে।
গ্রামীণ ব্যাংক, হোসেনাবাদ শাখার ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন আহম্মেদ জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে নুরুজ্জামানের সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। সে সময় পর্যন্ত নান্টু তিনটি বাড়ি থেকে ঋণের টাকা আদায় করে মোমিন দফাদারের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর থেকে নান্টুকে আর ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
সালাউদ্দিন আরো জানান, নুরুজ্জামান নান্টুর কোনো সন্ধান না পেয়ে ব্যাংকের লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তার খোঁজে রাতে ফিলিপনগর গ্রামে যান। এ সময় তারা ধারণা করেন, মোমিনের স্ত্রী ঋণ গ্রহীতা হিরা দীর্ঘদিন পর ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে আসায় কিস্তির জন্য নুরুজ্জামান হয়তো তাদের বাড়িতে যেতে পারেন। সেই মোতাবেক তারা মোমিনের বাড়িতে প্রবেশের রাস্তায় গিয়ে পৌঁছলে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি তাদের নিশ্চিত করেন নুরুজ্জামানকে এই দিকে আসতে দেখা গেছে।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বৃষ্টি ভেজা ওই রাস্তায় মোটরসাইকেলের চাকার দাগ দেখে খানিকটা নিশ্চিত হন নুরুজ্জামান মোমিনের বাড়িতেই আছেন। কিন্তু বাড়িতে তখন কেউ ছিল না। কিন্তু বাড়ীর প্রাচীরের ওপর থেকে বাড়ির ভেতর নুরুজ্জামানের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল দেখতে পাওয়া যায়। এরপর হোসেনাবাদ পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেয়া হয়। সেখান থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
মোমিন দফাদার বেশ কিছুদিন ধরে ঋণের টাকা দিতে মোধ করছিলেন না। প্রতি সপ্তাহে নুরুজ্জামান নান্টু তার বাড়িতে কিস্তি নিতে গেলে তা না দিয়ে নানা অজুহাতে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হতো বলে ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন জানিয়েছেন।
ঐ দিনই মোমিন দফাদারকে প্রধান আসামি ও তার স্ত্রীকে দ্বিতীয় আসামি করে অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে দৌলতপুর থানায় মামলা হয়।
দৌলতপুর থানার ওসি জহুরুল আলম সাংবাদিকদের জানান ঋণের কিস্তির টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
Leave a Reply